শিয়ালদহ থেকে শেষ ট্রেন ধরে যখন বহরমপুর পৌছালাম তখন প্রায় রাত ১২.৩০টা বেজে গিয়েছে,সেই সকাল ৭তাই বেরিয়েছি।এমনিতে বহরমপুরে যত রাতই হোক কোনো অসুবিধা নেই কারন রাস্তার সব জায়গাতেই এল.ই.ডি অথবা ভ্যাপার জ্বলে,আলোয় আলোকিত হয়ে থাকে চারিদিক। কিন্তু আজ তো অমাবস্যার রাত তার ওপর আবার শীতকাল,রাস্তাঘাট পুরো জনশুন্য।আর তাছাড়া শীতকালের এই ঠান্ডায় এতো রাত্রে কেই বা বেরোবে দরকার ছাড়া।।
Also Read:- Online Business Ideas in Bangla
ভাগ্যিস গ্যারাজ কাকুকে ফোন করে দিয়েছিলাম,নইলে আজ আমায় হেটেই বাড়ি ফিরতে হত।নেমেই গ্যারাজ থেকে গাড়ি টা নিয়ে আমি চলে আসছি বাইক চালিয়ে নিজের মত,ঠিক স্টেশনের মুখটাই বুদ্ধদেবের স্ট্যাচুর কাছে একটা ছেলে লিফট চাইলো।এমনি তে এতো রাত্রে আমি কাও কে লিফট দিইনা,কিন্তু ছেলেটা দেখলাম মুখ চেনা,আমার পাড়ার পাশের পাড়ার ছেলে।বললো দাদা আমি তোমার পাশের পাড়ায় থাকি,আমিও লাস্ট ট্রেনে কলকাতা থেকে ফিরলাম,টুকটুক পাচ্ছিনা,লিফট দেবে আমায়।আমিও ভাবলাম এত রাত্রে পাশের পাড়ার ছেলে টা কোনো রিক্সা টুকটুক পাচ্ছে না তাই চাপিয়ে নিলাম।
ছেলেটাকে তাড়াতাড়ি বাইকে চাপতে বললাম কারন ওর কিছুটা দুরেই লাশকাটা ঘরের পচা দুর্গন্ধ আসছিল।ছেলেটার সঙ্গে কথা বলে জানতে পারলাম ওর নাম ভবতোষ ঘোষ।ছেলে টা বললো দাদা তুমি আমায় পাড়ায় ঢোকার আগেই নামিয়ে দিও।আমি আর কিছু জিগেস না করে ওকে নামিয়ে দিলাম ওর পাড়ার ঠিক মুখে।ঠিক তখনই আমার বাইকের হেড লাইট টা বন্ধ হয়ে আবার নিজেই জ্বলে উঠলো।আমি ছেলেটাকে নামিয়ে পাড়ায় ঢুকতেই দেখলাম কয়েকজন লোকের জটলা কোনো মড়া পুড়িয়ে এসে গল্প করছে খুব অল্প বয়সে চলে গেল রে ছেলেটা।।
আমি এসব শুনতে শুনতে বাড়ি ঢুকলাম আর ভাবলাম কার আবার কি হলো কি জানি।।বাড়ি ঢুকেই ফ্রেশ হয়ে খেতে বসে মাকে জিগেস করলাম যে মা পাশের পাড়ায় কার কি হয়েছে গো,কিছু জানো তুমি?মা বললো যে একটা ছেলে হাইরোডে আক্সিডেন্টে মাড়া গিয়েছে আজ সকাল ৯টার দিকে।মনে মনে ভাবলাম সেই জন্যই পাড়ার মুখে জটলা ছিল।কি নাম ছেলেটার মাকে জিগেস করলাম।মা বললো ভবতোষ ঘোষ,ওই সামনের মুদিখানা দোকানদার পরিতোষের ছেলে।।
শুনে আমার মাথা থেকে পা অবধি একটা ঠান্ডা স্রোত নেমে গেল।।
লিখেছেন Dipankar Bhattacharya
0 Comments